কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা - কালোজিরার তেলের উপকারিতা

আজকে আমার এই আর্টিকেল থেকে কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা এবং কালোজিরার তেলর উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য উল্লেখ করার চেষ্টা করব।এই তথ্যগুলো পড়লে আপনারা কালোজিরার উপকারিতা ও কালোজিরার গুণাবলী এবং কালোজিরা আমাদের কি কি উপকার করে থাকে তা আপনারা জানতে পারবেন।


নিচে কালোজিরা বিভিন্ন তথ্য সম্পর্কে বিস্তারিত বিশ্লেষণ উল্লেখ করা হলো।

কালোজিরা

ইংরেজিতে Nigella sativa,Kalonji,Black Cumin এবং Kalojeere বলা হয় এই কালোজিরাকে।এটি মৌসুমী গাছে মাঝারি আকৃতির হয়, ফল ও ফুল একবার হয়।পাঁচটি পাঁপড়ি বিশিষ্ট,সাধারণত রং নীলচে সাদা বা বিশেষে হলুদাভ,পুরুষ ও স্ত্রী দুই ধরনেরই ফুল হয়।একটি বাড়তি অংশ থাকে কিনারায়।
কবিরাজি,ইউনানী, আয়ুর্বেদিক, ও বিভিন্ন চিকিৎসায় কালোজিরা ব্যবহার হয়। রান্নায় বিভিন্ন মসলার কাজে এর ব্যবহার হয়, যেমন পাঁচফোড়নের উপাদান হিসেবে। তেল হয় বীজ থেকে।

কালোজিরার ঔষধি গুনাগুন ও উপাদানর

ফসফরাস,লৌহ ও ফসফেট এগুলো কালোজিরাতে রয়েছে।বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ কারী উপাদান এবং অম্ল রোগের প্রতিষধক হিসেবে কালোজিরা ভূমিকা রয়েছে এবং ক্যান্সার প্রতিরোধ কেরটিন পাওয়া যায়।উপকারী ও পুষ্টি দিক থেকে কালোজিরাতে পাওয়া যায় প্রায় শতাধিক উপাদান।আমাদের স্বাস্থ্যের সুরক্ষার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এই কালোজিরা।
কালোজিরার তেল ও কালোজিরা ফুল মধু হিসেবে বিশ্বব্যাপী ব্যবহৃত হয় এবং এর ক্যাপসুলও এখন বাজারে পাওয়া যায়।এই ক্যাপসুলে ক্যান্সারের প্রতিরোধক ক্যারোটিন ও হরমোন শক্তিশালী প্রসাদ বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধের উপাদা্ন,অম্লনাশক উপাদান,পাচক এনজাইম ও অম্ল রোদের প্রতিষেধক হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
কালোজিরায় ২১ শতাংশ আমিষ, ৩৮ শতাংশ শর্করা,৩৫ শতাংশ স্নেহ বা ভেষজ তেল ও চর্বি সকল উপাদান পাওয়া যায়।খনিজ পদার্থ ও ভিটামিন রয়েছে।কালোজিরার পুষ্টি প্রতি গ্রামে রয়েছে-২০৮ মাইক্রোগ্রাম প্রোটিন,১৫ মাইক্রোগ্রাম ভিটামিন বি১,১.৮৫ মাইক্রোগ্রাম ক্যালসিয়াম, ৫৭ মাইক্রোগ্রাম নিয়াসিন,১০৫ মাইক্রোগ্রাম আয়রন,৫.২৬ মিলিগ্রাম ফসফরাস, ১৮ মাইক্রোগ্রাম কপার,৬০ মাইক্রোগ্রাম জিংক,৬১০ আইড ফোলাসিন রয়েছে।খাইমোকিনোন,নাইজেলোন ওআরো উপাদান পাওয়া যায় এ কালোজিরাতে।

কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা

একটি গুণকারী ও ঔষধি উদ্ভিদ হিসেবে কালোজিরা নিজেই একটি অন্যতম।আমাদের প্রয়োজনে পুষ্টি উৎস হিসেবে পরিচিত এবং এর বীজ থেকে তেল উৎপাদন হয়।নিচে কিছু তথ্য উল্লেখ করা হলো কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে-
  • শক্তি ও ঊর্জা বৃদ্ধিঃআমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে শরীরকে প্রয়োজনীয় উপাদান শক্তি ও ঊর্জা সরবরাহ করে এই কালোজিরা।কালোজিরাই যথেষ্ট পরিমাণের প্রোটিন,ফ্যাট,মিনারেল,ভিটামিন,ক্যার্বোহাইড্রেট ও এনজাইম সহ বিভিন্ন ধরনের উপাদান রয়েছে।যেটি মানুষের শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
  • শখের চিচিঙ্গা এবং হৃদয় স্বাস্থ্যঃকালোজিরা মানুষ শরীরের জন্য একটি বিশেষ উপাদান। কালোজিরাতে পাওয়া যায় মোটরিনিনা ধরনের একটি ইনফ্ল্যামেটরি বিষাণু ও এন্টিঅক্সিডেন্টও হিসেবে প্রস্তুতি করা হয়েছে,এটি হৃদয় সুস্থ করতে সাহায্য করে থাকে ও শখের চিচিঙ্গা একত্রিত হয়ে কালোজিরা শক্তিগুণ এন্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে পরিচিত।
  • ডাইজেস্টিভ সিস্টেমের উন্নতিঃপাচনের প্রক্রিয়াকে উন্নত করতে সাহায্য করে থাকে কালোজিরা।কালোজিরার রয়েছে অলিগোস্যাকারাইড ও ফাইবার যেটি আমাদের শরীরের বিশেষ ভূমিকা পালন করে।ডাইজেস্টিভ সিস্টেম ভালো প্রবর্তন করতে পারে ও কিছু কিছু মাধ্যমে প্রতিরোধশীলতা উন্নত করে থাকে।
  • ইমিউন সিস্টেমের উন্নতিঃআমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে এই কালোজিরার ভূমিকা রয়েছে।কালোজিরার বীজে মিনারেল ও ভিটামিন উপাদান রয়েছে, যা ইমিউন সিস্টেমকে সঠিক রাখে।
  • এন্টিব্যাকটেরিয়াল গুণঃমানুষের শরীরে বিভিন্ন ধরনের রোগ দেখা দেয় যেটি সাধারণত হয়ে থাকে ব্যাকটেরিয়া কারণে।শরীরের ব্যাকটেরিয়া এবং অন্যান্য ফাঙ্গাস জাতীয় রোগ দূর করার জন্য অনেক মানুষ কালোজিরা খেয়ে থাকে এবং ব্যবহার করে থাকে।
এন্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টিফাঙ্গা্স গুণ রয়েছে এ কালোজিরার মধ্যে, যেটি প্রত্যেকটি মানুষের শরীরে নানান অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের কাজ করে থাকে।কোমল খাদ্য ও রঘুনাশক হিসেবে পরিচিত এই কালোজিরার বা কালোজিরের বীজের উপকারিতা রয়েছে অনেকগুলো ও এই কালোজিরা সাধারণত খাওয়া হয়ে থাকে। নিচে কিছু প্রয়োজনীয় উপকারিতা উল্লেখ করা হলোঃ
  • ভিটামিন এ ও এঃবিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গ সুস্থ রাখার জন্য যেমন চোখের সুস্থতা,ত্বকের সুস্থতা ও শরীরের অন্যান্য অংশের সুস্থতার জন্য কালোজিরা এবং কালোজিরার তেলের পাওয়া যায় ভিটামিন এ ও এ। যা মানুষের শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
  • ফোলিক অ্যাসিডঃকালোজিরাতে পাওয়া যায় এক ধরনের এসিড।যার নাম ফোলিক এসিড।গর্ভকালীন মহিলাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান হিসেবে পরিচিত এই ফোলিক এসিড।
  • মিনারেলঃক্যালসিয়াম,ম্যাগনেসিয়াম,আয়রন,জিংক এবং সিলিকন সকল উপাদান গুলো মিনারেলের রয়েছে এবং এই মিনারেল কালোজিরাতে পাওয়া যায়। দাঁতের সুস্থতা ও হাড় মজবুত করতে কালোজিরা মিনারেলের ভূমিকা অপরিহার্য।
  • এন্টিঅক্সিডেন্টঃমানুষের শরীরের শক্তিশালী ও প্রতিরোধশীল তন্ত তৈরি করতে সাহায্য করে থাকে এই কালোজিরা।এন্টিঅক্সিডেন্ট বিটাকরোটিন ও ক্যারোটিন সহ নানা রকমের এন্টিঅক্সিডেন্ট অধিকারে থাকে এই কালোজিরাতে,যেটি মানুষের শরীরের জন্য প্রয়োজনীয়।
  • কোলস্ট্রল নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করেঃকোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করতে আমরা অনেকেই কালোজিরা খেয়ে থাকে যেটি স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী এবং হৃদরোগের সমস্যা দূর করে থাকে এ কালোজিরা।
কিন্তু, আমাদের কিছু জিনিস খেয়াল রাখতে হবে যেমন, কালোজিরা খাওয়ার আগে কোন চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে এবং যাদের কালোজিরা খেলে কোন প্রকার সমস্যা দেখা যায় তারা খাওয়ার আগে ডাক্তারে কাছে পরামর্শ নিয়ে খাওয়া ভালো।

কালোজিরা প্রতিদিন খেলে কি ক্ষতি হয়

আমরা প্রত্যেকটি মানুষই জানে কালোজিরা একটি উপকারী ঔষধি উপাদান। এই উপাদানটি প্রতিদিন সামান্য পরিমাণ খেলে আমাদের শরীরে কোন ক্ষতি হয় না ও এটি একটি সাধারণ খাদ্য। স্বাস্থ্যকর এবং পুষ্টির দিক দিয়ে কালোজিরা খাওয়া খুবই ভালো।কালোজিরা খেলে ডিপ্রেশনে সাহায্য করে এবং এর অনেক ভালো এনেমিয়া রয়েছে।


সাধারণত স্বাস্থ্যকর খাদ্য হিসেবে পরিচিত এই কালোজিরা এবং এ কালোজিরা খেলে তেমন কোন ক্ষতি হয় না।কিন্তু কোন মানুষ যদি এই উপাদানটি মাত্রা পরিমাণের অধিক খায় ও অতিরিক্ত সাপ্লিমেন্ট হিসেবে খেয়ে থাকে তবে সমস্যা দেখা দিতে পারে। নিচে কিছু উল্লেখ করা হলো-
ক্যালরির মাত্রাঃএই উপাদানটি খুবই কম ক্যালরি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, এই জন্য এটি স্বাস্থ্যকর খাদ্য হিসেবে বিবেচিত করা হয়। কিন্তু বেশি কালোজিরা খাওয়া শরীরের জন্য ক্ষতি কর হয়ে ওঠে।
অ্যান্টিনাট্রিটিভ সাবস্ট্যান্সঃআমাদের শরীরে যে কোন খাদ্যই অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে সেটি সাইড ইফেক্ট করে থাকে। তেমনি কালোজিরাতে এক ধরনের অ্যান্টিনাট্রিটিভ সাবস্ট্যান্স রয়েছে, যেটি খুব বেশি খাদ্য খেলে দেখা দেয়। এইজন্য মাত্রায় বেশি কালোজিরা খাওয়া যাবে না।
এলার্জিঃআমরা প্রত্যেকটি মানুষই বিভিন্ন রকমের হয়ে থাকে। তেমনি প্রতিটি মানুষেরই বিভিন্ন খাবার বা উপাদানের উপর এলার্জি হয়। এই জন্য কালোজিরা খেয়ে যেসব মানুষের এলার্জি সৃষ্টি হয় তাদের কালোজিরা না খাওয়াই ভালোই।
সঠিক মাত্রায় কালোজিরা খেলে কোন মানুষেরই শরীরে কোন প্রকার ক্ষতি না হয় উচিত।কিন্তু, সঠিক নিয়মে ও সুস্থ মূল্যের খাবার খাওয়াই শরীরের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

টানা সাত দিন কালোজিরা খেলে কি হয়

শারীরিক সুস্থ কিংবা কোন প্রতিধ্বনের উপর সাইড ইফেক্ট কিংবা যে কোন ব্যক্তির শারীরিক পরিস্থিতি সঠিক একটি মৌলিক প্রক্রিয়া যেটি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে।সঠিক পরিমাণের কালোজিরা খেলে কোন মানুষের শরীরে ক্ষতিকর কিছুই দেখা দেয় না,এছাড়া স্বাস্থ্যের উপকারের দিক থেকে এটি সহায়তা করে থাকে।

কালোজিরার কিছু উপাদান

কালোজিরায় বা কালোজিরার বীচে নানা রকমের ভেষজ উপাদান রয়েছে। নিচে এর মূল উপাদান গুলো উল্লেখ করা হলোঃ
প্রোটিনঃ কালোজিরাতে প্রোটিন ভূমিকা রয়েছে। মানুষের শরীরের শক্তিশালী হাড় বেশি ও শক্তির উৎপন্ন করতে প্রোটিনের ভূমিকা অপরিহার্য আর এই প্রোটিনের ভালো উৎস হলো কালোজিরা।
ফ্যাটঃঅসুস্থ ফ্যাটের এবং অনৈচ্ছিক ফ্যাট এর একটি উৎস হল কালোজিরা। কিন্তু স্বাস্থ্যকর ফ্যাট কালোজিরাতে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
কার্বোহাইড্রেটঃমানুষের শরীরে শক্তি উৎপন্ন করে থাকে কার্বোহাইড্রেট আর এ কার্বোহাইড্রেট কালোজিরাতেই থাকে।
ফাইবারঃফাইবার কালোজিরার একটি ভালো উৎস। মানুষের শরীরের পেটের তক্তকে শক্তি প্রদান করে এবং পাঁচনের সাহায্য করে থাকে এই কালোজিরার ফাইবার।
ভিটামিন এবং মিনারেলঃআমাদের শরীরে স্বাস্থ্যকর উপাদান হিসেবে ভিটামিন ও মিনারেল সরবরাহ করে থাকে। আর এই দুটি কালোজিরাতে পাওয়া যায়। ভিটামিন ই ও মিনারেল:(ক্যালসিয়া,ফসফরা্‌স, আয়রন) এইসব কিছু আমাদের শরীরকে সুস্বাস্থ্য রাখতে সাহায্য করে।
এন্টিঅক্সিডেন্টঃএন্টিঅক্সিডেন্ট এবং নানা রকমের পলিফেনল মানুষের শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে আর এই এন্টিঅক্সিডেন্ট কালোজিরাতে পাওয়া যায়।
প্রত্যেকটি মানুষের সাপ্তাহিক পুষ্টি উপাদান গুলি সরবরাহ করতে যেমন বিভিন্ন ধরনের খাদ্য উপাদান খেয়ে থাকি তেমনি কালোজিরাও একটি পুষ্টিকর উপাদান সরবরাহ করে থাকে মানুষের শরীরে।কিন্তু সপ্তাহে সাত দিন একটি খাদ্য মানুষের শরীরের সঠিক পরিবর্তন করার জন্য একটি পরীক্ষা হিসেবে চিন্তা করা যেতে পারে আর সাইকলিক কোন পরিবর্তন দেখা দিতে পারে না।

খালি পেটে সকালে কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা

মানুষের শরীরে বিভিন্ন ধরনের ছোট বড় সমস্যা দেখা দেয়, এ সমস্যাগুলো দূর করার জন্য কালোজিরার উপকারিতা অসীম।মানুষের স্বাস্থ্যের উপকারিতার কথা ভেবে অনেক চিকিৎসকেরা খালি পেটে কালোজিরা খাওয়ার পরামর্শ দেন।নিচে কিছু তথ্য উল্লেখ করা হলো-
যাদের হাঁপানি রোগ আছে এবং কফ হয়ে থাকে তাদের কালোজিরা খেলে সমস্যাটি দূর হয়।
  • যাদের চুল পড়ে এবং চুল পাকে তাদের কালোজিরা ব্যবহার করলে কিছুটা রোধ হয়।
  • মাথা ব্যথা করলে মাথা ব্যাথা সারাতে কালোজিরা বিশেষ উপকার রয়েছে।
  • যাদের ডায়াবেটিসের সমস্যা আছে তারা নিয়ম মেনে কালোজিরা খেলে অনেক উপকারে আসে।
  • স্মরণশক্তি ভালো রাখতে কালোজিরার ভূমিকা রয়েছে।
  • যেসব মানুষের কিডনির সমস্যা আছে তারা কালোজিরা খেলে সমস্যাটি দূর হয়ে যায়।
  • হৃদরোগীদের কালোজিরা খেলে,রোগটির সমস্যা দূর হয়।
  • হজম শক্তি সঠিক রাখে ও চোখের সমস্যা সমাধান হয় কালোজিরা খেলে।
  • যেসব মানুষের উচ্চ রক্তচাপ থাকে,কালোজিরা খেলে তাদের নিয়ন্ত্রণ আসে।
  • জ্বর,যৌন দুর্বলতা ও সৌন্দর্য সঠিক রাখার জন্য কালোজিরা খাওয়া ভালো।
  • আমরা যদি কালোজিরা সঠিক নিয়মে না খায় তবে কোন উপকারিতায় আসবেনা আমাদের শরীরে। কিন্তু খালি পেটে ঘুম থেকে উঠে কিছু খাওয়ার আগে কালোজিরা চিবিয়ে খেলে এবং এটি প্রতিদিন নিয়ম অনুযায়ী খেলে শরীরের অনেক উন্নতি দেখা দিবে।আবার যাদের কালোজিরা অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে এলার্জি এবং অন্যান্য ধরনের সমস্যা দেখা দেয় তারা যেন চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে এই নিয়মটি মেনে চলে।

কালোজিরা তেলের উপকারিতা

কালোজিরা তেল বিশুদ্ধ ও খাদ্য তত্ত্বাবধায়কভাবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।এই তেলটি নানারকম রান্নার কাজে ব্যবহৃত হয় ও নানা রকম উপকারিতা হিসেবে পরিচিত।কিছু প্রয়োজনীয় তথ্য নিচে উল্লেখ করা হলোঃ
প্রদাহ কমায়ঃযেসব মানুষের হাঁপানি এর সমস্যা এবং ব্যথার সমস্যা হয় তাদের এই কালোজিরা ব্যবহার করলে ভালো হয়ে যায়। কারণ এই তেলে আছে প্রাকৃতিক অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি ও আর্থ্রাইটিস।
ইমিউন ফাংশন বাড়ায়ঃআমাদের শরীরে সংক্রমনের বিরুদ্ধে লড়াই করতে যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে সেটি এ কালোজিরার তেলের রয়েছে আর এটি হলো অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি।
হজমের স্বাস্থ্যের উন্নতিঃযেসব মানুষের হজমের সমস্যা দেখা দেয় সে প্রত্যেকটি মানুষেরই কালোজিরার তেল ব্যবহার করা উচিত খাবারে। কারণ ইউরিটেবল বাওইয়েন সিনড্রোম ও ক্রোনস ডিজিজের মত হজম জনিত রোগ কালোজিরা তেলে ব্যবহারে সমস্যা দূর করে থাকে।
অ্যালার্জির লক্ষণ কমায়ঃএকজিমার মতো অ্যালার্জির সমস্যাগুলো দূর হয় এ কালোজিরার তেল ব্যবহার করা করে।এইতে রয়েছে অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি যা মানুষের শরীরে অনেক সমস্যা দূর করে থাকে।
জ্ঞানীয় কার্যকারিতা উন্নত করাঃএই তেল ব্যক্তিদের স্মৃতিশক্তি ও জ্ঞানী ও কার্যকারিতা উন্নতি করতে সাহায্য করে থাকে ও বয়স্ক সম্পর্কিত অন্যান্য জ্ঞানীয় হ্রাসে আক্রান্ত ভালো হতে দেখা যায়।
ক্যান্সারের বিরুদ্ধে সুরক্ষাঃকালোজিরার তেল নিয়ে অনেক গবেষণায় দেখা গেছে ক্যান্সারের বিকাশ থেকে ভালো করতে অনেকটা সাহায্য করে।


এই কালোজিরা তেলটি একটি প্রাকৃতিক উদ্ভিদ থেকে উৎপাদন হয়।এই উদ্ভিদটির নাম নাইজিলা স্যাটিভা।বিভিন্ন চিকিৎসায় এই তেলটি বহু বছর ধরে ঔষধি হিসেবে ব্যবহার করা হয় আসছে।নিচে কিছু সুপরিচিত সুবিধায় কথা উল্লেখ করা হলো কারো জিরার বিষয়ঃ
  • কালোজিরার তেলে পাওয়া যায় খাইমোকুইনোন একটি শক্তিশালী যৌগ,যার মধ্যে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর গুণাবলী রয়েছে।হাঁপানি,ক্রোনের রোগ ও রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস এই ধরনের রোগের চিকিৎসায় এই যৌগটি নানা রকমের প্রধান জনক অবস্থায় কার্যকর বলে ব্যবহৃত হয়।
  • ওলিক অ্যাসিড ও লিনোলিক অ্যাসিডের উৎস রয়েছে এ কালোজিরায় তেলের ফ্যাটি অ্যাসিডে।চুল ও ত্বকের স্বাস্থ্য সুন্দর রাখার জন্য এই ফ্যাটি অ্যাসিড গুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ।ক্যান্সার ও হৃদরোগের মতো স্থায়ী রোগের চিকিৎসা কালোজিরা তেলের মাধ্যমে সাহায্য হয়ে থাকে।
  • ত্বকের ব্রণ,একজিমা এবং সোরিয়াসিসের চিকিৎসা কার্যকর এ কালোজিরা তেলের মাধ্যমে অনেক উপকারিতা হয়ে থাকে মানুষেরা।
এই থেকে বুঝা যায় যে কালোজিরা তেল একটি প্রাকৃতিক, যার মধ্যে রয়েছে প্রচুর স্বাস্থ্য সুবিধা ও বিভিন্ন চিকিৎসার করার ঔষধি গুণাবলী।

কালোজিরা রাতে খেলে কি হয়

মৃত্যু ছাড়া সব রোগের মহান ঔষধ হিসেবে কালোজিরা কে ধরা হয়।বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসা, আয়ুর্বেদিক, কবিরাজি বিভিন্ন কাজে প্রাচীনকাল থেকে এই কালোজিরা ব্যবহার হয়ে আসছে।আমরা অনেকেই কালোজিরার ব্যবহার সম্পর্কে সঠিক ধারণা জানিনা এজন্য শুধু রান্নায় কালোজিরা ব্যবহার করে। আর একাধিক পুষ্টি উপাদান এই কালোজিরাতে রয়েছে। যেমনঃ ভিটামিন,জিংক,কপার,আয়রন,ক্যালসিয়া, প্রোটিন,কার্বোহাইড্রেট রয়েছে। এই সকল উপাদান গুলো আমাদের শরীরের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী।কালোজিরার কিছু উপকারী তথ্য নিচে উল্লেখ করা হলো-
ক্যান্সার প্রতিরোধ করেঃ১০০ টি রোগের প্রতিষেধক থাকে এই কালোজিরাতে,যার মধ্যে একটি প্রতিষেধকের নাম কেরোটিন। যেটি ক্যান্সারে প্রতিরোধ করে মানব দেহের জন্য।এইজন্য নিয়মিত কালোজিরা ক্ষার অভ্যাস করা উচিত এই সকল রোগ থেকে বাঁচার জন্য।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করেঃডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করা যায় কালোজিরা নিয়মিত খেলে।রক্তের গ্লুকোজের এর মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে কালোজিরা। তাই প্রতিদিন ডায়াবেটিস রোগীরা কালোজিরা খাওয়ার অভ্যাস করা উচিত।
ব্যাথা নাশোক হিসেবে কাজ করেঃকালোজিরার তেল ব্যবহার করলে যে কোন ব্যথা ভালো হয়ে যায়।যেসব মানুষের বাতের ব্যথা আছে তাদের কালোজিরা তেল ব্যবহার করলে বাতের ব্যথা খুব দ্রুত ভালো হয়ে যায়।যে জায়গায় ব্যথাটি হয় সে জায়গায় হালকা কুসুম গরম করে কালোজিরা তেল ব্যবহার করলে অনেক উপকার পাওয়া যায়।
চুল পড়া প্রতিরোধ করেঃকালোজিরার উপকারিতা অপরিসীম রয়েছে চুল পড়ার ক্ষেত্রে।যেসব মানুষের চুল পড়ে তারা কালোজিরা তেল ব্যবহার করলে চুল পড়া বন্ধ হয়ে যায়।
মাথাব্যথা,জ্বর,সর্দি উপশম করেঃকালোজিরা জ্বর,সর্দি ও মাথাব্যথা সমস্যা গুলো অনেক উপকার করে থাকে।মধু ও কালোজিরা দুটো একসাথে খেলে শরীরের তাপমাত্রা সঠিক থাকে। ফলে জ্বর,সর্দি ও মাথা ব্যাথা সমস্যা গুলো আর হয় না।
স্মরণশক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করেঃকালোজিরা ও কালোজিরা তেল নিয়মিত খেলে মস্তিষ্কের রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখে।মানবদেহের রক্ত চলাচল কালোজিরা স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে।

এই সকল জিনিস কালোজিরার মধ্যে উপস্থিত রয়েছে। কিন্তু ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে কালোজিরা খাওয়া সকলের জন্য উচিত। তাছাড়া কালোজিরা নিয়মিত খেলে অনেক উপকার পাওয়া যায়। তবে খেয়াল রাখতে হবে যে সকল মানুষের কালোজিরাতে সমস্যা তারা যেন এটি ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে নিয়ম অনুযায়ী সেবন করে।

লেখকের শেষ মন্তব্য

আজকের আর্টিকেল থেকে আপনারা কালোজিরা সম্পর্কে অনেক কিছুই জানতে পারবেন বলে আশা করি।এছাড়া আর একটি কথা বলি যেসব মানুষের কালোজিরা খেলে এলার্জি বা অন্য কোন ধরনের সমস্যা হয় তারা যেন এটি কম খায় বা প্রয়োজন হলে যেন সেবন করে এবং ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে সেবন করাই ভালো হবে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url